লিবিয়া সীমান্তের অদূরে নৌঘাঁটি স্থাপন করল মিশর

- আপডেট সময় : ০৪:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১ ৮২৮ বার পড়া হয়েছে
লিবিয়া সীমান্ত থেকে ১৩৫ কিলোমিটারের দূরত্বে একটি নৌঘাঁটি স্থাপন করল মিশর।
শনিবার (৩ জুলাই) দেশটির স্বৈরাচারী ও বিশ্বাসঘাতক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি তা উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনকালে তার ঘনিষ্ঠ মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসক শেখ মুহাম্মাদ বিন যায়েদ আল নাহিয়ান ও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলের অন্যতম মুহাম্মাদ আল মানফি উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি বলেন, এই নৌ-ঘাঁটিটি ভূমধ্য ও লোহিত সাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে যেমন সহায়তা করবে ঠিক তেমনি কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায়ও কাজে দেবে। তাছাড়া অযাচিত অভিবাসীদের নজরদারিতেও তা সহায়ক হবে।
উদ্বোধনকালে ঘাঁটিতে জার্মানির তৈরি একটি সাবমেরিন এবং ইতালি থেকে সরবরাহকৃত দুটি এফআরইএমএম-ক্লাস ইতালিয়ান ফ্রিগেটসের পাশাপাশি দুটি ফ্রেঞ্চ মিস্ট্রাল হেলিকপ্টার ক্যারিয়ারও নোঙর করে রাখা হয়েছিলো।
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর সদস্যরা নৌ-মহড়া দিয়েছিলো। যেখানে তারা রকেট নিক্ষেপ, প্যারা-জাম্পিং ও উভচর ল্যান্ডিংয়ের অনুশীলন করে।
এসময় স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট সিসি ও তার অতিথিরা ঘাঁটিতে থাকা একটি ফ্রেঞ্চ মিস্ট্রালে দাঁড়িয়ে মহড়া উপভোগ করেন।
জানা যায় নতুন এই নৌ-ঘাঁটির নাম রাখা হয়েছে দা জুলাই থ্রি বেইস। যা ২০১৩ সালের ওই দিনটিকে স্মরণ করিয়ে দেয় যেদিন মিশরের একমাত্র বৈধ প্রেসিডেন্ট মুসলিম ব্রাদারহুডের শহীদ মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিশ্বাসঘাতক সিসি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
১০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই নৌ-ঘাঁটির নেভাল ক্যুয়ের ( জেটি বিশেষ) পরিমাণ ১০০০ মিটার যার গভীরতা পানির নীচে ১৪ মিটার। এটিতে বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়ার জন্যেও আলাদা ক্যুয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করা সত্ত্বেও লিবিয়া ২০১১ সালে অশান্ত হয়ে উঠার পর থেকে পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত মিশরের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এখনো মাথাব্যথার কারণ।
লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে দেশটির পূর্বাঞ্চল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বিদ্রোহী জেনারেল হাফতারকে সিসির মিশর ও শেখ মুহাম্মাদ যায়েদ আল নাহিয়ানের সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম প্রথম সমর্থন দিলেও অশান্ত দেশটিতে ঐক্যের লক্ষ্যে কায়রো পরবর্তীতে তাদের সমর্থন ধীরে ধীরে জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক প্রচেষ্টায় দেওয়া শুরু করে।
লিবিয়ার ৩ সদস্যের প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলের অন্যতম মুহাম্মাদ আল মানফি যিনি নৌ-ঘাঁটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনিও জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক প্রচেষ্টায় মিশরের সমর্থন প্রক্রিয়ার অংশ।
তাছাড়া লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহী হাফতারের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমর্থন ও গ্যাস সমৃদ্ধ পূর্ব ভূমধ্যসাগরে সামুদ্রিক অধিকারের বিষয়ে তারা তুরস্কের সাথে স্নায়ু যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলো।
যদিও কায়রো এবং আঙ্কারার নিজেদের মধ্যকার সুসম্পর্ক ফিরিয়ে আনতে সাবধানতা অবলম্বন পূর্বক সম্প্রতি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় পারস্পরিক বৈঠক ও আলাপ-আলোচনা জারি রেখেছে তারা।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।